আল্লাহ এতো মহান হলে তিনি কেন মানুষের কাজে রাগান্বিত হন?”

আল্লাহ এতো মহান হলে তিনি কেন মানুষের কাজে রাগান্বিত হন?”
.
নাস্তিকেরা একটি প্রশ্ন প্রায়ই সামনে এনে থাকে তা হল “তোমাদের আল্লাহ কেন এত সংকীর্ণ মানসিকতা সম্পন্ন যে তিনি তুচ্ছ মানুষের কর্মকাণ্ডে রাগান্বিত হন।” এসব যুক্তি কখনই আমাকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি। এগুলো না আল্লাহর অস্তিত্বকে বাতিল প্রমাণ করতে পারে, না কোন যুক্তিতর্ককে (যা কিনা মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে) শক্তিশালী করতে পারে। (এটাকে Appeal to Disgust বলা হয়)।
.
প্রশ্নটির দুর্বলতা গুলো বের করার জন্য আমরা যুক্তিতর্কগুলোকে কিছু ভাগে ভাগ করে নেই।
.
১.আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশক্তিমান।
.
২.আমরা মানুষেরা হচ্ছি ক্ষুদ্র।
.
৩. আল্লাহ একজন সর্বশ্রেষ্ঠ সত্ত্বা তাই আমাদের কর্মকাণ্ডে তাঁর বিচলিত হওয়া উচিত নয়।
.
৪.ইসলাম/আব্রাহামীয় স্রস্টা আমাদের কর্মকাণ্ডে (গুনাহ, শিরক ইত্যাদি) রাগান্বিত হন।
.
৫.সুতরাং এ কারনে আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ হতে পারেন না এবং আমি আল্লাহর অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দিহান।
.
এখন এই পাঁচটি পয়েন্টকে সামনে রেখে আমরা এখন দেখব কেন উক্ত প্রশ্নটি খুব একটা শক্তিশালী নয়।
.
আল্লাহ শুধুমাত্র সর্বশক্তিমানই নন তিনি একই সাথে সর্বজ্ঞ ও ন্যায়বিচারক। এটা কিভাবে একজন সর্বজ্ঞ এবং ন্যায়বিচারক স্রষ্টার পক্ষে মানানসই হতে পারে যে অন্যায় ও অবিচার চলতে থাকবে আর তিনি এর মধ্যস্ততা করবেন না?
.
সমগ্র সৃষ্টিজগতের নিয়ম-নীতিমালার অনেক ব্যাপক। এর বিশালতা এতই বেশি যে তা আমাদের কল্পনারও বাইরে কিন্তু আস্তিকেরা আল্লাহকে সর্বজ্ঞ এবং ন্যায়বিচারক হিসেবে বিশ্বাস করে। তার মানে দাঁড়াচ্ছে আল্লাহ আমাদের অন্যায় কাজগুলো সম্পর্কে জানেন আর যেহেতু তিনি ন্যায়বিচারক তাই তিনি আমাদের এই কাজগুলোর প্রতি মনোনিবেশ করেন।
.
.
দ্বিতীয়ত যেকোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘ক্ষুদ্র/তুচ্ছ’ শব্দটি আপেক্ষিক এবং তা দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। অন্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আসলে নির্ধারণ করে দেয় কার কাজ তুচ্ছ এবং কার কাজ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি কাউকে ভালবাসি তাহলে তার ছোটখাটো কাজও আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। অন্যদিকে আমরা যদি কারও প্রতি নির্বিকার থাকি তাহলে তার খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজও আমাদের কাছে ছোট মনে হয়। আল্লাহ/স্রস্টা বারবার উল্লেখ করেছেন যে তিনি আমাদের প্রতি স্নেহশীল, তিনি আমাদের সাথেই আছেন এবং সর্বোপরি তিনি আমাদের ভালোবাসেন। তাহলে কেন আমরা এভাবে চিন্তা করতে পারি না যে একজন স্নেহশীল সত্ত্বা আমাদের কাজের জন্য উদ্বিগ্ন হবেন?
.
সেই সাথে এটাও যোগ করা যায় যে আল্লাহর যে ন্যায়বিচারকশীল গুণের কথা বলা হয়েছে তা থেকে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি, যদি আল্লাহর অস্তিত্ব থেকেই থাকে তাহলে কখনোই তিনি আমাদের প্রতি উদাসীন হতে পারেন না বরং মনোযোগী হবেন।
===================================
লেখকঃ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *