.
#ঋতুবতী_নারীরা_কি_ইসলামে_অবহেলিত? (প্রথম পর্ব)
.
ঋতুবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে ইসলামের মনোভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাস্তিক ড. হুমায়ুন আজাদ তার লিখিত “নারী” বইতে বলেছেন,
.
“বাইবেল ও কোরআনে ও সব ধর্ম পুস্তকে ঋতুকে দেখা হয়েছে ভয়ের চোখে এবং ঋতুবতী নারীদের নির্দেশ করা হয়েছে নিষিদ্ধ ও দূষিত প্রাণীরুপে …………… “ঋতুক্ষরণকে প্রতিটি ধর্ম ও আদিম সমাজ দেখেছে দানবিক ব্যপার রূপে”।
.
[হুমায়ুন আজাদ,নারী, অধ্যায়ঃ- লৈঙ্গিক রাজনীতি, পৃষ্ঠাঃ- ৪৪; (আগামী প্রকাশনী, ৩৬ বাংলাবাজার ঢাকা, ৩য় সংস্করণ, ষষ্ঠদশ মূদ্রণ, বৈশাখ ১৪১৯ ,মে ২০০৯)]।
.
পরিতাপের বিষয় হল, ড. আজাদ শুধুমাত্র ধারণা ও আনাঢ়ি অনুবাদকের সাহায্য নিয়েই বেশ জোরেশোরেই ইসলামের বিরুদ্ধে কলম চালিয়েছেন। তিনি হয়ত ভুলেই গেছেন যে শুধুমাত্র একজনের অনুবাদের উপর নির্ভর করে আর ধারণার বশবর্তী হয়ে সমালোচনা করাটা কোন জ্ঞানবান লোকের কাজ নয়। আরও মজার বিষয় হলো তিনি এই বিষয়টির সমালোচনা করতে গিয়ে একটি মাত্র কোরআনের আয়াতের সাহায্য নিয়েছেন তাও আবার ভুল অনুবাদের, কিন্তু তিনি নবী (ﷺ) এর হাদিস থেকে এই বিষয়ে কোন দলিল পেশ করতে পারেন নি। তার এই মিথ্যাচার দেখে আল্লাহ্ তায়ালার একটি বানীর কথা মনে পড়ে গেল। মহান আল্লাহ্ বলেন,
وَمِنَ النَّاسِ مَن يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلَا هُدًى وَلَا كِتَابٍ مُّنِيرٍ
ثَانِيَ عِطْفِهِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ ۖ لَهُ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ ۖ وَنُذِيقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَذَابَ الْحَرِيقِ
“মানুষের মধ্য কেউ কেউ আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে; তাদের কাছে না আছে জ্ঞান,না আছে পথনির্দেশ, না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব। সে বিতণ্ডা করে ঘাড় বাকিয়ে লোকদেরকে আল্লাহর পথ হতে ভ্রষ্ট করার জন্য তার জন্যে রয়েছে দুনিয়াতে লাঞ্ছনা এবং কিয়ামতের দিন আমি তাকে দহন যন্ত্রণা আস্বাদন করাব”। ( সুরা হাজ্জঃ ৮-৯ আয়াত)
.
আমাদের আলোচনার শুরুতেই চলুন আমরা হায়েয (Menstruation) সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই। .
হায়েযের সংজ্ঞা প্রদান করতে গিয়ে শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল উসাইমিন (রাহি) বলেন,
.
‘হায়েযের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে কোন বস্তু নির্গত ও প্রবাহিত হওয়া। আর শরীয়তের পরিভাষায় হায়েয বলা হয় ঐ প্রাকৃতিক রক্তকে, যা বাহ্যিক কোন কার্যকারণ ব্যাতীতই নির্দিষ্ট সময়ে নারীর যৌনাঙ্গ দিয়ে নির্গত হয়। হায়েয প্রাকৃতিক রক্ত, অসুস্থতা আঘাত পাওয়া, পড়ে যাওয়া এবং প্রসবের সাথে এর কোন সম্পর্কে নেই। এই প্রাকৃতিক রক্ত নারীর অবস্থা ও পরিবেশ- পরিস্থিতির বিভিন্নতার কারণে নানা রকম হয়ে থাকে এবং এই কারণেই ঋতুস্রাবের দিক থেকে নারীদের মধ্যে বেশ পার্থক্য দেখা যায়।’
.
{উসাইমিন, মুহাম্মাদ বিন সালেহ, নারীর প্রাকৃতিক রক্তস্রাব, অনুবাদঃ মীযানুর রহমান আবুল হোসাইন, পৃষ্ঠাঃ ০৪; (ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদি আরব, ১৪২৯ হি)}।
.
এইবার চলুন মেডিক্যাল সাইন্স অনুসারে আমরা দেখি যে হায়েয তথা রজঃস্রাব (Menstruation) কাকে বলে।
.
হায়েয হলো উচ্চতর প্রাইমেট (Primate) বর্গের স্তন্যপায়ী (Mammalian) স্ত্রী একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা প্রজননের সাথে সম্পর্কিত। প্রতি মাসে এটি হয় বলে বাংলায় এটিকে মাসিক নামেও অভিহিত করা হয়। প্রজননের উদ্দেশ্যে নারীদের ডিম্বাশয়ে (Ovum) ডিম্বস্ফোটন হয় এবং তা ফ্যালোপিয়ান টিউব (Fallopeian Tube) দিয়ে নারীদের জরায়ুতে চলে আসে। এই পরিস্ফুটিত ডিম্ব জরায়ুতে ৩-৪ দিন অবস্থান করে। এই সময়ের মধ্যে যদি কোন শুক্রানু নারীদেহের জরায়ুতে প্রবেশ না করে, তাহলে সেই ডিম্বাণু নষ্ট হয়ে যায়, সেই সাথে জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়াম (Endometrium) স্তর ভেঙ্গে পড়ে। আর যদি পুরুষের শুক্রাণু (Sperm) সেখানে পৌছে তাহলে তা নিষিক্ত হয়ে যায় এবং ভ্রূণের (Zygote) সূচনা ঘটে। এন্ডোমেট্রিয়াম এর ভঙ্গ ঝিল্লি, সঙ্গের শ্লেষ্মা ও এর রক্তবাহ থেকে উৎপন্ন রক্তপাত সব মিশে তৈরি তরল এবং তার সাথে তঞ্চিত এবং অর্ধ তঞ্চিত তরল কয়েকদিন ধরে লাগাতার যৌনি পথে নির্গত হয়। এই ক্ষরণই হায়েয নামে পরিচিত। কখনো কখনো একে গর্ভস্রাব হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।। যদি জরায়ুতে অবমুক্ত ডিম্বটি পুরুষের শুক্রানো দ্বারা নিষিক্ত হয়ে Implantation শুরু হয় তবে আর হায়েয হয় না। তাই মাসিক রজস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়াকে মেয়েদের গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। রজস্রাব যুবতীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ২১-৪৫ দিন পর পর ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে ২১-৩১ দিন পর পর সংগঠিত হয়। এটি সাধারণত মেয়েদের ১১ বা ১৩ বছর বয়স থেকে শুরু হয়। মহিলাদের হায়েয একেবারে বন্ধ হয়ে যায় যখন তাদের Menopause শুরু হয়। তাদের এই রক্তপাত সাধারণত ২-৭ দিন স্থায়ী হয়।
.
Frederick R. Bailey, A Text Book of Histology, (William Wood and Company, New York, 3rd ed.)
“Menstruation and the menstrual cycle fact sheet”. Office of Women’s Health. December 23, 2014. Retrieved 25 June 2015.
.
ড. আজাদ তার বইতে হায়েয বিষয়ক ইসলামের বিধানের সমালোচনা করতে গিয়ে একটি মাত্র আয়াতের সাহায্য নিয়েছেন। আয়াতটি হল,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢]
.
“আর তারা তোমাকে হায়েজ সম্পর্কে প্রশ্ন করে,বল তা কষ্টকর। সুতরাং তোমরা হায়েজ কালে স্ত্রী সঙ্গম (যৌনমিলন) বর্জন করবে এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী সঙ্গম করবে না। অতঃপর তারা যখন পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট ঠিক সে ভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন”। ( সুরা বাকারাহঃ ২২২ আয়াত)
.
চলুন আমরা এই আয়াতের শানে-নুযূলটি একটু জেনে নেই। আয়াতটি মূলত ইহুদীদের লক্ষ্য করে নাযিল হয়। তারা হায়েযা মেয়েলোকদের সাথে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করত। তাদের কে এই সময়ে ঘোড়ার আস্তাবলে রেখে দিত, ভালোমত খাবার গ্রহণ করতে দিত না, সমাজের লোকেরা তাদের সাথে এই সময়টাতে দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ রাখতো। এভাবে ঋতু চলাকালীন সময়ে মেয়েলোকেরা অবহেলিত হত ইহুদিদের সমাজে। এমনকি মক্কার পৌত্তলিকরাও ঋতুবতী মহিলাদের কে অবজ্ঞা করত, তাদের খারাপ চোখে দেখত, তাদেরকে এই সময়ে আলাদা ঘরে রাখত। আবার তাদের সাথে এই সময়ে যৌনমিলনও করত তারা। তখন সাহাবারা তাদের স্ত্রীদের সাথে এই সময়ে কি ধরণের আচরণ প্রদর্শন করবেন তা আল্লাহর রাসুল (ﷺ) এর কাছে জানতে চাইলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়, যা নিম্নের হাদিস দ্বারা পরিষ্কার ভাবে বুঝা যায়।
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ الْيَهُودَ، كَانُوا إِذَا حَاضَتِ الْمَرْأَةُ فِيهِمْ لَمْ يُؤَاكِلُوهَا وَلَمْ يُجَامِعُوهُنَّ فِي الْبُيُوتِ فَسَأَلَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى { وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ} إِلَى آخِرِ الآيَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” اصْنَعُوا كُلَّ شَىْءٍ إِلاَّ النِّكَاحَ ” . فَبَلَغَ ذَلِكَ الْيَهُودَ فَقَالُوا مَا يُرِيدُ هَذَا الرَّجُلُ أَنْ يَدَعَ مِنْ أَمْرِنَا شَيْئًا إِلاَّ خَالَفَنَا فِيهِ فَجَاءَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ وَعَبَّادُ بْنُ بِشْرٍ فَقَالاَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ الْيَهُودَ تَقُولُ كَذَا وَكَذَا . فَلاَ نُجَامِعُهُنَّ فَتَغَيَّرَ وَجْهُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى ظَنَنَّا أَنْ قَدْ وَجَدَ عَلَيْهِمَا فَخَرَجَا فَاسْتَقْبَلَهُمَا هَدِيَّةٌ مِنْ لَبَنٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ فِي آثَارِهِمَا فَسَقَاهُمَا فَعَرَفَا أَنْ لَمْ يَجِدْ عَلَيْهِمَا .
.
যুহায়র ইবন হারব (র)…আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইয়াহুদীরা তাদের মহিলাদের হায়েয হলে তার সঙ্গে এক সাথে আহার করত না এবং এক ঘরে বাস করত না । সাহাবায়ে কিরাম এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) -কে জিজ্ঞেস করলেন । তখন আল্লাহ তায়াআলা এ আয়াত নাযিল করলেন:-“ তারা তোমার কাছে হায়েয সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে । বলে দাও যে, তা হলো কষ্টদায়ক ………………. ”। এরপর রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা (সে সময় তাদের সাথে) শুধু সহবাস ছাড়া অন্যান্য সব কাজ কর। এ খবর ইয়াহুদীদের কাছে পৌছলে তারা বলল, এ লোকটি সব কাজেই কেবল আমাদের বিরোধিতা করতে চায় । অত:পর উসায়দ ইবন হুযায়র (রা) ও আববাদ ইবন বিশর (রা) এসে বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! ইয়াহুদীরা এ রকম এ রকম বলছে । আমরা কি তাদের সাথে (হায়িয অবস্হায়) সহবাস করব না? রাসুলুল্লাহ (ﷺ) -এর চেহারা মূবারক বিবর্ণ হয়ে গেল । এতে আমরা ধারণা করলাম যে,তিনি তাদের ওপর ভীষণ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা (উভয়ে) বেরিয়ে গেল । ইতিমধ্যেই রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে দুধ হাদিয়া এল । তিনি তাদেরকে ডেকে আনার জন্য লোক পাঠালেন । (তারা এলে) তিনি তাদেরকে দুধ পান করালেন । তখন তারা বূঝল যে, তিনি তাদের ওপর রাগ করেননি।
.
{মুসলিম, আবুল হোসাইন ইবনুল হাজ্জাজ, আস-সহীহ, অধ্যায়ঃ (৩) হায়েজ সম্পর্কিত বর্ণনা, ২/৬০১; ইবনু কাসীর, ইসমাঈল ইবনু উমার, তাফসীরুল কোরআনীল আযীম, ১/৬০৯; ইবনু হাজার আসকালানী, বুলুগুল মারাম, অধ্যায়ঃ ঝতুবতী মহিলাদের যে সকল কাজ বৈধ, হাদিস নংঃ ১৪৩ (তাওহীদ পাবলিকেশন, ৯০, হাজী আব্দুল্লাহ সরকার লেন, বংশাল, ঢাকা-১১০০, ১ম প্রকাশ, আগস্ট, ২০১৩)}
.
কোরআনের এই আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নারীদের হায়েজ কালীন সময়ের কথা বর্ণনা করেছেন। হায়েযকালীন সময় যে তাদের জন্য কষ্টকর, যন্ত্রনাদায়ক তা উল্লেখ করেছেন এবং সেই সময়ে তাদের সাথে যৌনমিলন করতে নিষেধ করেছেন। ডঃ আজাদ একটি যায়গায় মারাক্তক ভুল করেছেন আর তা হলো এই আয়াতের ক্ষেত্রে “আযা” (أَذًى)শব্দের তিনি ভুল অর্থ গ্রহণ করেছেন তার “নারী” বইতে। আর ভুল অর্থ গ্রহণ করেই তিনি ইসলামের সমালোচনা করেছেন কয়েক পৃষ্ঠা ব্যাপী। চলুন প্রসিদ্ধ অভিধান থেকে দেখে নেয়া যাক যে “আযা” শব্দের অর্থ কি কি হতে পারে ?
.
বিশ্ববিখ্যাত আরবী টু ইংরেজী অভিধান “A dictionary of modern written Arabic language” অনুযায়ী أَذًى শব্দের অর্থ গুলো হলোঃ
To suffer damage, be harmed, hurt, wrong, to molest, annoy, irritable, trouble.
.
{Hans wehr, Edited by:- J Milton Cowan, A dictionary of modern written arabic, p.12; (Spoken language servibe, Inc.,Ithaca, New York, 3rd edition,1976)}
.
“Al-Mawid ( A modern Arabic to English dictionary)” অনুসারে “আযা” (أَذًى) শব্দের অর্থ হলোঃ
harm, damage, injury, wrong, detriment, lesion, grievance, nuisance, annoyance, harassment.
.
{Dr. Rohi Baalbaki, Al-Mawrid, p.67; ( Dar-el-ilm, Lilmalayin, seventh edition, Beirut, Lebanon,1995)}
.
“আল-মু’জামুল ওয়াফী” অনুসারে “আযা” (أَذًى) শব্দের অর্থ হলোঃ
কষ্ট, ক্ষতি, অনিষ্ঠ, আঘাত।
.
{ড. মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, আল-মু’জামুল ওয়াফী, পৃষ্ঠাঃ ৬২; (রিয়াদ প্রকাশনী, ৩৪ নর্থ ব্রুকহল রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা, ১৩শ সংস্করণ, ২০১৩)}।
.
আপনি লক্ষ্য করুন কোন অভিধানেই কিন্তু “আযা” (أَذًى) শব্দের অর্থ দানবিক, অপয়া, পশুর মত, নিষিদ্ধ, দূষিত প্রাণী ইত্যাদি নেই। ইসলামে নারীদের ঋতুকালীন অবস্থায় যে তাদের কে অবহেলা করা হয় এই বিধানটি ডঃ আজাদ কোন দলীলের (কোরআন ও সুন্নাহ) মাধ্যমে গ্রহণ করেছেন তা পরিষ্কার নয়। কেননা এই আরবী শব্দের অর্থগুলো আমরা প্রসিদ্ধ অভিধান গ্রন্থ থেকে দেখেছি। সেখানে কোথাও এই কথা বলা নেই যে, “আযা” (أَذًى) শব্দের অর্থ অপয়া, দানবিক ইত্যাদি। আর আল কোরআনে এমন কোন আয়াতও নেই যার দ্বারা ডঃ আজাদের এই কল্পনাপ্রসূত দাবীর সত্যতা পরিলক্ষিত হয়।
.
(ইনশাআল্লাহ চলবে ………………)
.
=====
লেখকঃ জাকারিয়া মাসুদ [ফেসবুক id: Jakaria Masud]
Leave Your Comments