উত্তর:
অজু ছাড়া কুরআন শরীফ স্পর্শ করা নাজায়েজ।
দলীলসমূহ:
এক. রাসুলুল্লাহ (صلى اللّٰه عليه وسلم) আমর বিন হাজম (রা.)-এর কাছে এ মর্মে চিঠি লিখেছেন যে ‘পবিত্র হওয়া ছাড়া কেউ কোরআন স্পর্শ করবে না।’ (মুয়াত্তা ইমাম মালেক : হা. ৬৮০, সুনানে দারেমি : হা. ২২৬৬, মুসান্নাফে আব্দির রাজ্জাক : হা. ১৩২৮, সহিহ ইবনে হিব্বান : হা. ৫৬৫৯, আসসুনানুল কুবরা লিলবায়হাকি : হা. ৪০৮)
ইমাম আহমাদ (রহ.) বলেন, আমার জানা মতে, হাদিসটি সহিহ। (তারিখে দিমাশক : ২২/৩০৮)
ইমাম ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান (রহ.) বলেন, ‘আমর বিন হাজম (রা.)-এর এ চিঠির চেয়ে বিশুদ্ধ কোনো চিঠির কথা আমার জানা নেই।’ (তারিখে দিমাশক : ২২/৩০৮)
ইমাম হাকেম নাইসাবুরি (রহ.) বলেন, ‘ওমর ইবনে আবদুল আজিজ ও ইমাম জুহরি (রহ.) এ চিঠির যথার্থতার সাক্ষ্য দিয়েছেন।’ (আল মুসতাদরাক : ১/৩৯৭) এ ছাড়া ইবনে দাদিকুল ঈদ, ইবনুল মুলাক্কিন, ইবনে কুদামা, আবদুল হক ইশবিলি (রহ.) প্রমুখ হাদিসবিশারদ সহিহ বলেছেন।
দুই. হজরত হাকিম ইবনে হিজাম (রা.) বলেন, ‘নবী করিম (صلى اللّٰه عليه وسلم) তাঁকে ইয়ামানের গভর্নর হিসেবে পাঠানোর সময় এ কথা বলে দিলেন, ‘পবিত্রতাবিহীন কোরআন স্পর্শ করবে না।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : হা. ৬০৫১, আলমুজামুল কাবির : হা. ১৩১৩৫, সুনানে দারা কুতনি : হা. ৪৪০) ইমাম হাকেম ও আল্লামা জাহাবি (রহ.) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
তিন. আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, নবী করিম (صلى اللّٰه عليه وسلم) বলেছেন, ‘পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ যেন কোরআন স্পর্শ না করে।’ (আল মুজামুল কাবির : হা. ১৩২১৭, সুনানে দারা কুতনি : হা. ৮৩৭, আসসুনানুল কুবরা লিলবায়হাকি : হা. ৭২৫৫) ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, ‘হাদিসটির সনদ বা সূত্রে কোনো সমস্যা নেই।’ (আততালখিসুল হাবির : ১/১৩১) হায়সামি (রহ.) বলেন, ‘এর সব বর্ণনাকারী গ্রহণযোগ্য।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ : ১/২৭৬)
চার. হজরত ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, ‘রাসুল (صلى اللّٰه عليه وسلم) কাফেরদের দেশে কোরআন শরিফ নিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন।’ (সহিহ মুসলিম : হা. ১৮৬৯) হাদিসবিশারদরা বলেন, এ নিষেধাজ্ঞার কারণ হলো, যাতে কাফিররা কোরআন শরিফ অপবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করতে না পারে আর যেন কাফিরদের মাধ্যমে কোরআনের অবমাননা না হয়। (আলইস্তিজকার : ৫/২২)
পাঁচ. হজরত ওমর (রা.) কাফির থাকা অবস্থায় তাঁর বোনকে কোরআন দেখাতে বলেছিলেন, তখন তাঁর বোন বলেছিলেন, ‘তুমি নাপাক! আর এ গ্রন্থ পবিত্র হওয়া ছাড়া কেউ ধরতে পারে না।’ (সুনানে দারা কুতনি : হা. ৪৪১, আসসুনানুল কুবরা বায়হাকি : হা. ৪১৩)
Leave Your Comments