প্রশ্ন :   আমার মাঝে মাঝে এমন হয় যে, ফজরের সময় মসজিদে গিয়ে দেখি নামাযের ইকামত হচ্ছে বা জামাত শুরু হয়ে গেছে। এ অবস্থায় জামাতের কতটুকু অংশ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে আমি সুন্নত পড়ব? দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে নাকি ইমামকে তাশাহহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তরফজরের সুন্নত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

لا تدعوا ركعتي الفجر، وإن طردتكم الخيل.

তোমরা ফজরের সুন্নত ছেড়ে দিও না। যদিও সৈন্যবাহিনী তোমাদেরকে তাড়া দেয়। -মুসনাদে আহমদ,হাদীস ৯২৫৩

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবু দারদা রা.-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবীদের থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন। যেমন আবু দারদা রা. ফজরের সময় মসজিদে প্রবেশ করে লোকজনকে ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণে (ফজরের) সুন্নত পড়তেন। অতপর মানুষের সাথে জামাতে শরিক হতেন। -শরহু মাআনিল আছার, তহাবী ১/২৫৬

সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে যদি জামাতের সাথে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় তাহলে সুন্নত পড়ে নিবে। আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে সুন্নত পড়বে না; বরং জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং সূর্যোদয়ের পর তা পড়ে নিবে।

প্রকাশ থাকে যে, কোনো কোনো ফকীহ সুন্নত পড়ার পর ইমামকে তাশাহহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ার কথা বলেছেন। কিন্তু অধিকাংশ ফকীহর মত তা-ই, যা উপরে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, জামাত শুরু হওয়ার পর মসজিদে সুন্নত পড়ার কিছু শর্ত রয়েছে। যথা-

ক. কাতারের সাথে মিলিত হয়ে পড়া যাবে না। মসজিদের বারান্দায় বা কাতার থেকে দূরে মসজিদের এক কোণে বা কোনো খুঁটির আড়ালে সুন্নত পড়বে।

খ. জামাত থেকে পিছনে পৃথক হয়ে সুন্নত পড়ার মতো জায়গা না থাকলে সুন্নত পড়া যাবে না। এক্ষেত্রে জামাতে শরিক হয়ে যাবে।

 

 

-আলজামিউস সগীর ৯০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৬১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬৪০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩০৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২০; মাবসূত, সারাখসী ১/১৬৭; ফাতহুল কাদীর ১/৪১৬

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *