কলাবিজ্ঞানীরা মনেকরে অন্যান্য প্রাণী যেমন, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, ভাল্লুকের মতো মানুষের জীবনও ছকে বাধা। জন্ম নিবে, বড় হবে, গদবাধা জীবন যাপন করবে তারপর একদিন মারা যাবে। যেহেতু ডারউইনের অনুসারীদের ধারণা মানুষ ও অন্যান্য জীবজন্তুর মাঝে কোনো পার্থক্য নাই তাই সব জীবজন্তুর মতো মানুষেরও পরিণতি একই। বস্তুবাদী দুনিয়াতে বেড়ে উঠা কলাবিজ্ঞানীরা মানুষের সাথে অন্যান্য প্রাণীর শারীরিক গঠন প্রণালীর কিছু সদৃশ্য থাকার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয় যে মানুষ আর অন্যান্য প্রাণীরা মূলত একই। যদিও আধুনিক বিজ্ঞান বলে অন্যান্য প্রানীদের থেকে আমাদের শারীরিক গঠনে মলিকুলার লেভেলে অনেক পার্থক্য আছে।
বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা বাদ দিয়ে যদি কমন সেন্স এপলাই করি তাহলে দেখা যাবে মানুষের সাথে অন্যান্য প্রানীদের পার্থক্যের স্বরূপ কত বিস্তৃত। ধর্মীয়ভাবে আমরা জানি মানুষের জন্য এই পৃথিবীটা একটা পরীক্ষা-পূর্ব প্রস্তুতি কেন্দ্র। এখানে মানুষ শিখবে, জানবে তারপর একটি পরিক্ষার মাধ্যমে তার জানার, শিখার লেভেল যাচাইবাছাই করে পুরস্কৃত করা হবে। এখানে পরীক্ষা পূর্ব প্রস্তুতি কেন্দ্রে মানুষদের একা ছেড়ে দেয়া হয়নি, দেয়া হয়েছে গাইডলাইন ম্যানুয়াল, ট্রেইনার, মেন্টর ইত্যাদি সহায়ক যাতে কেউ কমপ্লেইন করতে না পারে যে তারা প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা পায়নি।
অন্যান্য জন্তু জানোয়ার জন্য এই পৃথিবীটা পরিক্ষাগারও না, তাদের জন্য পরীক্ষা পরবর্তী পুরস্কার-তিরস্কারের ব্যবস্থাও নাই। জীব জানোয়ারেরা পৃথিবীতে আসবে, খেয়াল খুশিমতো জীবন যাপন করবে (এখানেও তাদের কিছু নির্দেশনা দেয়া আছে) তারপরে নির্দিষ্ট সময় পরে চলে যাবে।
সঙ্গত কারণেই জীবজন্তুরা জন্ম থেকেই সাবলম্বী, তাদের হাঁটা চলা, খাওয়া দাওয়া শিখার জন্য তেমন কোনো ট্রেনিং এর দরকার হয়না, কিন্তু মানুষ জন্ম নেয় চূড়ান্ত অসহায় অবস্থায়, সব কিছু হাতেকলমে শিখতে হয়। অন্যান্য প্রাণী আর মানূষ যদি একই হতো তাহলে মানুষেরা জন্ম থেকেই সাবলম্বী হয়ে যেত।
সৃষ্টিকর্তা যেহেতু মানুষের পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন তাই মানব শিশু জন্ম থেকেই সব শিখবে, তার শিক্ষার লেভেলের উপর তার পরিণতি নির্ভর করবে। দুৰ্ভাগ্যবশতঃ আমরা নিজেদের পার্থিব জীবন সুন্দর করে সাজানোর মধ্যেই আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করে ফেলি। একটা অসহায় মানব শিশু পরবর্তীতে শিক্ষা পেয়ে, ট্রেনড আপ হয়ে জ্ঞান বিজ্ঞানের কত কিছু অর্জন করে, আকাশে প্লেইন উড়ায়, সাবমেরিনে ভ্রমণ করে, চাঁদে পা রাখে সবই কিন্তু তার শিক্ষার ফল।অন্যদিকে জীব জন্তুদের যেহেতু মৃত্যু পরবর্তী হিসাব নিকাশের উপর শান্তি-শাস্তি নির্ভর করে না তাই সৃষ্টিকর্তা তাদের মাঝে নিজেদের ডেভেলপ করার কোনো তাড়না সৃষ্টি করে দেননি। তাই বানর জন্ম থেকেই গাছে ঝুলছে কখনো বানরেরা এটা ফীল করে না যে অনেক হয়েছে এখন একটা বিল্ডিং বানানো দরকার। ইঁদুরের মাটির গর্তেই আছে জন্ম থেকে কখন তাদের ইচ্ছাও করবে না নিজেদের লাইফ স্টাইল একটু উন্নত বা চেঞ্জ করতে কারণ তাদের এই দুনিয়াতে শিখতে হবে, জানতে হবে, মানতে হবে এইধরণের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয় নাই।
মানুষ ব্যতিক্রম যাদের এই পৃথিবীতে আগমনের হেতুই শিখবে, জানবে, মানবে এবং এর উপর ভিত্তি করে তার বাকি জীবনের ভালো মন্দ নির্ধারিত হবে। তাই কলাবিজ্ঞানীদের ফাঁদে পড়ে মানুষ আর বাকি সব জীবজন্তুদের লাইফ স্টাইল এক মনে করে জীবনযাপন করলে নির্ঘাত বিপদের মুখে পড়বেন তাই এখন থেকেই সতর্ক হোন।
Saifur Rahman
Leave Your Comments