নাস্তিকদের প্রতি অতি সাধারণ কিছু চ্যালেঞ্জিং প্রশ্ন

[১] নাস্তিকরা মুসলিমদেরকে আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করতে বলে। মুসলিমরা যুক্তির পর যুক্তি দিলেও নাস্তিকদের কাছে এ পর্যন্ত কোনো যুক্তিই মনঃপুত বা গ্রহণযোগ্য হয়নি। তার মানে একটা ব্যাপার পরিষ্কার যে, নাস্তিকরা আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখেই তবে তার অস্তিত্ব স্বীকার করতে চায়। কিন্তু মুসলিমরা যতই গলা ফাটিয়ে বলুক না কেনো আল্লাহ একজন অদৃশ্য সত্তা, মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, তাকে চোখে দেখানো সম্ভব নয় – নাস্তিকদের কর্ণকুহরে তা প্রবেশ করে না। কাজেই মুসলিমরা হাজারো যুক্তি দিলেও তারা যেহেতু আল্লাহকে নাস্তিকদের চোখের সামনে হাজির করে দেখাতে পারে না সেহেতু নাস্তিকরা মুসলিমদেরকে ‘অন্ধ বিশ্বাসী’ বলে হেয় করে। কেউ নাস্তিকতায় অন্ধ বিশ্বাসী হলে আমার কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু তাই বলে ব্যাপারটা তো আর মগের বা নাস্তিকদের মুল্লুক হতে পারে না যে, তারা যা বলবে তা-ই ঠিক।
আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে যে কেউ স্বীকার করতে বাধ্য যে, এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা সম্পর্কীত প্রশ্নটি (স্রষ্টা আছে কি নেই) যেমন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেমনি আবার এই প্রশ্নের উত্তরও সবেচেয়ে জটিল। আর তা-ই যদি হয় তাহলে একই সাথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে সহজ-সরল ও প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা অতি আবশ্যক। এজন্য নাস্তিকদের প্রতি অতি সাধারণ
===>অথচ চ্যালেঞ্জিং কিছু প্রশ্ন রাখা হলো:
১.১ আল্লাহ বা স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে ‘প্রমাণ’ বলতে নাস্তিকরা আসলে কী বুঝাতে চায়? কী ধরণের ‘প্রমাণ’ দেখালে তারা স্রষ্টার অস্তিত্বকে মেনে নেবে, এবং কেনো? এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মুসলিমদেরকে উদ্দেশ্য করে ‘প্রমাণ নাই’ ‘প্রমাণ নাই’ ‘প্রমাণ নাই’ বলে চিৎকার-চেঁচামেচি করার পেছনে উদ্দেশ্য কী?
১.২ একজন জন্মান্ধের কাছে নাস্তিকরা তাদের নিজেদের অস্তিত্ব কিংবা একটি উদাহরণ হিসেবে তাদের গুরু রিচার্ড ডকিন্সের অস্তিত্ব প্রমাণ করে দেখাতে পারবে কি-না? তারা যদি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে কি তারা মেনে নিতে রাজি আছে যে, বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্ব নাই?
১.৩ ধরা যাক কেউ দাবি করলো এই বলে যে, একটি মোবাইল সেটটার কোনো মেকার নাই বা থাকার দরকার নাই। নাস্তিকরা যেখানে পুরো মহাবিশ্বের মেকারকে অস্বীকার করছে সেখানে এই ধরণের অতি মামুলি দাবি তো যে কেউই করতে পারে (তাছাড়া জন্মান্ধদের ব্যাপারটা তো রয়েই যাচ্ছে যাদেরকে কিছুই দেখানো সম্ভব নয়)। নাস্তিকদের বিশ্বাস অনুযায়ী মোবাইল সেটটার যদি মেকার থাকে বা থাকার প্রয়োজন হয় তাহলে তাদেরকে যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করে দেখাতে হবে। তারা যদি কোনো প্রমাণ বা যুক্তি দিতে ব্যর্থ হয় তাহলে কি তারা মেনে নিতে রাজি আছে যে, এই মোবাইল সেটের কোনো মেকার নাই বা থাকার দরকার নাই?
[২] নাস্তিকরা মুসলিমদেরকে কোরআন যে আল্লাহর বাণী তা প্রমাণ করতে বলে। মুসলিমরা এ পর্যন্ত অসংখ্য যুক্তি দেওয়া সত্ত্বেও নাস্তিকদের কাছে কোনো যুক্তিই গ্রহণযোগ্য হয়নি। তাদের কাছে সবই নাকি হাস্যকর রকমের কু-যুক্তি। ভালো কথা। গ্রহণযোগ্য হতেই হবে, এমন কোনো কথা নাই। কিন্তু এক্ষেত্রেও তারা মুসলিমদেরকে ‘অন্ধ বিশ্বাসী’ বলে বিভিন্নভাবে উপহাস-বিদ্রূপ করে। ব্যাপারটা যেহেতু ফ্রী-লাঞ্চ নয় সেহেতু এবার নাস্তিকদের পালা।
কোরআনের বাণীর সাথে যেহেতু অদৃশ্য স্রষ্টার সম্পর্ক আছে বলে দাবি বা বিশ্বাস করা হয় সেহেতু অদৃশ্য কারো বাণী নিয়ে ভাবার আগে দৃশ্যমান কারো বাণী নিয়ে ভাবাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কোরআনকে যারা আল্লাহর বাণী প্রমাণ করতে বলে তাদেরকে আগে নিদেনপক্ষে নিম্নোক্ত দুটি বিষয়ে প্রমাণ দেখাতে হবে:
২.১ তাদের কেউ যদি কোনো বই বা প্রবন্ধ লিখার দাবি করে থাকে তাহলে সেই বই বা প্রবন্ধ যে তার নিজের লিখা, অন্য কারো নয়, সেটি প্রমাণ করে দেখাতে হবে। চ্যালেঞ্জ থাকলো।
২.২ “প্রজাতির উৎপত্তি” নামক বইটির লেখক যে চার্লস ডারউইন নিজেই, অন্য কেউ নয়, তা প্রমাণ করতে হবে। এক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জ থাকলো।
উল্লেখ্য যে, উপরের প্রশ্নগুলো অনেক আগেই করা হয়েছে কিন্তু আজ পর্যন্তও কেউ জবাব দেয়নি।
এই ধরণের প্রাথমিক ও অতি সহজ কিছু প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ঘাড়তেড়ার মতো একতরফা ভাবে মুসলিমদেরকে “আল্লাহর অস্তিত্ব” আর “কোরআন আল্লাহর বাণী” প্রমাণ করতে বলা এবং অবশেষে তাদেরকে ‘অন্ধ বিশ্বাসী’ বলে উপহাস-বিদ্রূপ করা চরম গোঁড়ামী আর অন্ধত্ব ছাড়া কিছু নয়, এমনকি অসততাও বটে।
(Collected)

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *