যুদ্ধ চলছে, ঠান্ডা যুদ্ধ। দল ভারী করার যুদ্ধ। মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে খেলার যুদ্ধ। বুঝতে পারছেন না কি বলছি ? আচ্ছা, আসুন এই যুদ্ধের কিছু উদাহরন দেখি-ask sumon

যুদ্ধ চলছে, ঠান্ডা যুদ্ধ। দল ভারী করার যুদ্ধ। মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে খেলার যুদ্ধ। বুঝতে পারছেন না কি বলছি ? আচ্ছা, আসুন এই যুদ্ধের কিছু উদাহরন দেখি …

===>
আপনি নতুন কোন মুভি দেখছেন। মুভির এক পর্যায়ে দেখা গেল একটি বাচ্চা প্রচুর কান্না করছে, সাথে একটা হৃদয় নিংড়ানো আবেগময় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। বাচ্চার কান্নাটা আপনার হৃদয়কে স্পর্শ করে গেল। আপনার অবচেতন মন খুজে ফিরছে কি কারনে এই বাচ্চাটা কান্না করছে ?! কিছুক্ষন পর দেখা গেল ঐ বাচ্চার বাবা-মাকে কেহ গুলি করে বা বোম ব্লাস্টের মাধ্যমে মেরে ফেলেছে। তখন আপনার অবচেতন মনে সেই গুলি করা ব্যক্তি বা বোম ব্লাস্ট করা ব্যক্তির প্রতি তৈরি হল একরাশ ঘৃণা ও রাগ। আরো কিছুক্ষন পর সেই ঘাতকের চেহারা দেখতে পেলেন আপনি। মাথায় টুপি ও সৌদি রুমাল, মুখভর্তি দাড়ি, পরনে পাঞ্জাবি পায়জামা …

এখন আপনি যতই ইসলামভক্ত হন না কেন, মাইন্ড গেইম সম্পর্কে যদি আপনার ধারনা না থাকে তবে আপনার মনে সেই ব্যক্তির প্রতি সাথে সাথে অবচেতনভাবে সেই মাথায় টুপি ও সৌদি রুমাল, মুখভর্তি দাড়ি, পাঞ্জাবি পায়জামার প্রতি একটা ঘৃণা ও বিদ্ধেষ সৃষ্টি হয়ে যাবে। যা হয়তো আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না …
আর যারা ইসলাম সম্পর্কে অভিজ্ঞ না শুধু নামে মুসলমান তাদের চিন্তার কি অবস্থা হবে ?!

===>
আবার ধরুন,
রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন। হঠাৎ চোখ পড়ল একটি রাস্তার পাশে একটি বিজ্ঞাপন “ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা”। সাথে ছবি দেয়া টুপি মাথায় দেয়া, মুখে দাড়ি, পাঞ্জাবি পড়া একটি লোক ভিক্ষার থালা নিয়ে দাড়িয়ে। আপনার অবচেতন মন ধারনা তৈরি করে নিয়েছে “ টুপি মাথায় দেয়া, মুখে দাড়ি, পাঞ্জাবি পড়া” লোকের সাধারণত ভিক্ষুক টাইপের গরিব, আত্মমর্যাদাহীন হয়। সমাজে এই জাতীয় লোকের কোন কদর নেই, দাম নেই, সম্মান নেই …

===>
আবার ধরুন,
আপনি ও আপনার বাচ্চা একসাথে টিভিতে কার্টুন দেখছেন। কার্টুনের নাম “Little Krishna” অথবা “Return of Hanuman” । সেখানে দেখা যাচ্ছে হনুমান বা কৃষ্ণ একাই অসাধ্য সাধন করছে এবং তার ভক্তবৃন্দরা ভক্তির সাথে তাদের পূজা-অর্চণা করছে। আপনি নিজের মনকে যতই আটকে রাখুন, আপনার বাচ্চা কিন্তু হনুমান বা কৃষ্ণর ভক্ত হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে কিছু চাইতে হলে সে আল্লাহ তায়ালা থেকে হনুমান বা কৃষ্ণকে অগ্রাধিকার বেশিই দেবে ….

===>
আবার ধরুন,
বর্তমানে ছেলে বা মেয়েরা মুভি-নাটকের খুব ভক্ত। প্রতিদিন কিছু সময় এই পেছনে ব্যয় না করলে মনে হয় তাদের জীবনটাই বৃথা। তো মুভি-নাটকের মূল টপিকই হল প্রেম, লিভ-টুগেদার, অবৈধ সম্পর্ক, পালিয়ে বিয়ে, ভ্যালেন্টাইনস ডে, ধর্ষন, জুয়া, ড্রাগ, একশ্যান সিন ইত্যাদি। আপনিই বলুন বর্তমানে এই জাতীয় বিষয়গুলো আমাদের সমাজে বেড়েছে নাকি কমেছে ? চিন্তা করেছেন কখনও …

===>
আবার ধরুন,
কিছুই না, নায়কের রুমে শুধু চে গুয়েভারার একটি ছবি টাঙ্গানো (চে গুয়েভারাকে বর্তমানে নাস্তিকরা তাদের আদর্শ হিসেবে মেনে থাকে)। যেহেতু দেখা যাচ্ছে নায়ক চে গুয়েভারার ভক্ত তাই নায়কের ভক্তরাও চে গুয়েভারার ভক্তে পরিনত হবে(অবচেতন মনে)। কিছুদিন পর তারা চে গুয়েভারার আদর্শে আদর্শবান হবে, অর্থাৎ নাস্তিকতার দিকে ধাবিত হবে …

===>
আবার ধরুন,
আপনি ছোটবেলায় সামাজিক বিজ্ঞান বইতে জনসংখ্যা অধ্যায়ে পড়েছেন “মুখ দিয়েছেন যিনি আহার দেবেন তিনি”- এটা কুসংস্কার। তো বড় হয়ে যখন আপনার ধর্মগুরুর মুখে ঠিক এই কথাটি শুনলেন তখন আপনার অবচেতন মন আপনার ধর্মকে একটি কুসংস্কার হিসেবে চিহ্নিত করল। আপনি ধারনাও করতে পারবেন না যে, আপনার আজকের এই অবচেতন মনের ধারনা সৃষ্টির জন্য কেহ আপনার জন্য ছোটবেলায় এই পড়ার অধ্যায় তৈরি করেছিল !!! চিন্তা করেছেন কখনও …

———————————————————————————
এগুলো নাম হচ্ছে মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে খেলা, নিরব যুদ্ধ, দল ভারি করার যুদ্ধ … এই যুদ্ধে ক্ষেত্র বিশাল …
আপনি বা আপনার প্রজন্ম কি প্রস্তুত এই যুদ্ধে লড়াই করার জন্য ? কি কি সরঞ্জাম প্রস্তুত করছেন তাদের ঈমান ও আমল বাচানোর জন্য ? চিন্তা করেছেন কখনও …

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *