কিছুদিন ধরে চলা অনন্ত জলিলকে নিয়ে ট্রল দেখে হতাশা চেপে রাখতে পারছি না।আমাদের মানসিকতার লেভেল এতো নিচে নেমে গেছে ভেবে অবাক হই। অনন্তকে নিয়ে প্রথম ট্রল শুরু হয় তার উচ্চারণ নিয়ে। আমার সেই সব মানুষদের প্রতি ঘৃণা হয়, যারা মানুষের জন্মগতত্রুটি নিয়ে ট্রল করে। ধরুন আপনার চেহারা খারাপ, দেখতে কালো, কিন্তু এটাতো আপনার চয়েস ছিলো না তাহলে কেনো এসব নিয়ে আপনাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে হবে? এটা কি আপনার প্রতি অবিচার নয়? অনন্তের উচ্চারণ বা অন্য কারো দুর্বলতা নিয়ে ট্রল করার আগে দু বার চিন্তা করা উচিত।
এখন তিনি বন্যার্তদের নিজের জীবন, সময় আর অর্থ দিয়ে সাহায্য করছেন, তা নিয়েও কিছু মানুষ আরামদায়ক রুমে, চা-কফি পান করতে করতে ট্রল করছে, সে নাকি লোক দেখানোর জন্য বা তার নতুন ছবির প্রচারণার জন্য এইসব করছে। মানুষের কমন সেন্সর লেভেল কোথায় নেমে গেছে দেখে অবাক হই। সম্প্রতি সে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে, জামাতে নামাজ পড়ছে, দাওয়াতের কাজ করছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ক্ষেত্রে সমালোচনা করতে খুব সতর্ক। পত্র পত্রিকার খবর অনুযায়ী সে আর নতুন কোনো ছবিতে কাজ করছে না, প্রযোজনাও করছে না, যা খুবই ভালো লক্ষণ।
সেলেব্রিটিদের ইসলামের ইমেজ ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের নজির ভুরি ভুরি।এই উদাহরণগুলোর ফলাফল ভয়াবহ। যেমন ধরুন, শাহরুখ-আমিরের একসাথে ইফতার করার ছবি/ভিডিও দেখে ভক্তরা খুব খুশি, তারা জোশের সাথে তাদের পরবর্তী সিনেমা দেখার জন্য অগ্রিম টিকেট কেটে রাখে। কিছুটা ইসলামের ছোয়া থাকায় ভক্তরা এটাকে অন্যায়ই মনে করে না। মেসুত ওজিলের ফুটবল মাঠে মোনাজাতের দৃশ্য দেখে বিগলিত হওয়া ভক্ত কিন্তু ফুটবল খেলার পিছনে অহেতুক সময় নষ্ট করা বা ওজিলের শরীরে উল্কি দেখে নিজেদের শরীরে উল্কি আঁকা টাকে খারাপ মনে করা দূরে থাক বরং আরো উতসাহিত বোধ করে।যুক্তি হলো, ওজিলের মতো ধার্মিক ফুটবলার যদি এটা করতে পারে আমরা করলে দোষ কোথায়? আপনার পছন্দের শিল্পী যখন ইসলাম নিয়ে গান করে তখণ তার বাকি গানগুলো আপনার কাছে হালাল হয়ে যায়, আপনার মনে ওই শিল্পীর প্রতি একটা ইসলামী শ্রদ্ধাবোধ চলে আসে ফলে সে যে গানই করুক না কেনো আপনার কাছে তা এক্সেপ্টেড। এমনকি ইসলামিক ফেইসবুক সেলিব্রিটি, যাদের হাজারো মানুষ ফলো করে, যাদের লেখায় প্রভাবিত হয়, তাদের অনেক ব্যক্তিগত আচরণ ও কর্ম যা ইসলাম সম্মত নয়, তাও তাদের ফলোয়াররা চোখ বন্ধ করে অনুসরণ করতে থাকে, যা খুবই ভয়ঙ্কর।
এই রকম উদাহরণ অনেক দেয়া যাবে। মূলকথা হলো, সেলেব্রিটিদের সাময়িক ইসলামী বেশ ধারণ দীর্ঘ মেয়াদি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে যারা সত্যিই সব কিছু ছেড়ে ইসলামের পথে চলে আসেন (যেমন: জুনায়েদ জামশেদ (রঃ), ইউসুফ ইসলাম প্রমুখ) তাদের দ্বারা ইসলামের যে উপকার হয় অন্যরা তা দেখে শুধু দূর থেকে ঈর্ষাই করতে পারে। দুআ করি, আল্লাহ যেনো অনন্ত জলিলকে জুনায়েদ জামশেদ, ইউসুফ ইসলামদের তালিকায় নাম লিখানোর তৌফিক দান করেন।
ভাই Saifur Rahman
Leave Your Comments