ইসলাম-সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন বা অভিযোগ দেখা মাত্রই তড়িঘড়ি করে জবাব না দিয়ে নিচের পয়েন্টগুলো আগে বিবেচনা করুন:

ইসলাম-সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন বা অভিযোগ দেখা মাত্রই তড়িঘড়ি করে জবাব না দিয়ে নিচের পয়েন্টগুলো আগে বিবেচনা করুন:

১. প্রশ্ন বা অভিযোগটি কি ইসলামের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে নাকি চালাকি করে ইসলাম-বহির্ভূত কোনো কিছুকে ইসলামের নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে? লক্ষ্য করলে দেখবেন ইসলাম-সম্পর্কিত প্রশ্ন বা অভিযোগগুলোর অধিকাংশই ইসলামের সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। কখনো মুসলিম সমাজের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনাকে টেনে নিয়ে এসে ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, কখনো বা আবার প্রচলিত কিছু বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে প্রশ্ন করা হয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান না থাকলে এগুলো আলাদা করা বেশ কষ্টসাধ্যই বটে। এজন্য প্রশ্নকারীকে পাল্টা প্রশ্ন করে নিশ্চিত হতে হবে, তার প্রশ্ন বা অভিযোগটি কি ইসলাম-ভিত্তিক নাকি ইসলাম-বহির্ভূত?

২. প্রশ্ন বা অভিযোগটি যদি ইসলাম-ভিত্তিক হয় তাহলে সেটি কি কোরআন-ভিত্তিক নাকি হাদিস-ভিত্তিক? প্রত্যেক ইসলামে বিশ্বাসীর জানা থাকা উচিত যে, কোরআনের বাইরের কোনো উৎস থেকে কোনো কিছুকে ভুল বা অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করলে তাতে ইসলাম ভুল বা অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ হয় না। ইসলামকে ভুল বা অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করতে হলে কোরআনকে ভুল বা অবৈজ্ঞানিক প্রমাণ করতে হবে।

৩. প্রশ্ন বা অভিযোগটি যদি কোরআন-ভিত্তিক হয় তাহলে কোরআনের আয়াত নং জেনে নিয়ে নিজে পড়ে দেখুন তার প্রশ্ন বা অভিযোগটি সত্য কি-না। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাবে কোরআনের আয়াতের নামে মিথ্যাচার কিংবা নিজস্ব মনগড়া অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

৪. প্রশ্ন বা অভিযোগটি যদি হাদিস-ভিত্তিক হয় তাহলে হাদিস নং জেনে নিয়ে নিজে যাচাই করে দেখুন তার প্রশ্ন বা অভিযোগটি সত্য কি-না। এক্ষেত্রেও দেখা যাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাদিসের নামে মিথ্যাচার বা অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে এটা জানাতেও ভুলবেন না যে, হাজার হাজার হাদিসের সবগুলোকেই মুসলিমরা নির্ভুল হিসেবে ডিফেন্ড করে না। এই সত্যটা না জানানো হলে অনেকেই হাদিসের মধ্যে কিছু ভুল-ভ্রান্তি দেখিয়ে সেটার উপর ভিত্তি করে ইসলাম সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা মনে পোষণ করে রাখবে। হয়তো এই কারণেই সে ইসলাম গ্রহণ না করে একদিন দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবে। এমনকি কিছু হাদিসের উপর ভিত্তি করে জন্মসূত্রে মুসলিমদেরও কেউ কেউ ইসলাম নিয়ে সংশয়-সন্দেহ করে এক পর্যায়ে নাস্তিক বা কোরান-অনলি হয়ে যায়। কাজেই জেনেবুঝে কাউকে বিভ্রান্তির মধ্যে রাখা মুসলিমদের কখনোই উচিত নয়।

৫. প্রশ্ন বা অভিযোগটি যদি সত্যি সত্যি কোরআন- বা হাদিস-ভিত্তিক হয়ে থাকে তাহলে চিন্তাভাবনা করে ঠাণ্ডা মাথায় জবাব দেওয়ার চেষ্টা করুন। তবে জবাব দিতেই হবে, এমন কোনো কথা নাই। কারণ ভুল বা অযৌক্তিক জবাব দিয়ে কাউকে বিভ্রান্তির মধ্যে রাখার চেয়ে জবাব না দেওয়াই উত্তম। এজন্য সঠিক জবাব জানা না থাকলে সময় নিয়ে আগে নিজে জানার চেষ্টা করুন।

[এস. এম. রায়হান]

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *