ফের অশান্ত আরাকান, ঘুমন্ত বিশ্ব মুসলিম বিবেক!

কী লিখবো?
কাকে উদ্দেশ্য করে লিখবো?

কোন ভাষায় লিখবো? আমি যে ভাষাহীন! বাকরুদ্ধ! কলম যে সামনে চলছে না! সহায়-সম্বলহীন, অভিভাবকহীন একটি জনগোষ্ঠীকে আর কতকাল পর্যন্ত অমানবিক নির্যাতন, নিপীড়ন, জুলুম, হত্যা, ধর্ষণ সয়ে রক্তদানের বিনিময়ে নিজভূমে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যেতে হবে তার কোনো উত্তর জানা নেই। সেই প্রশ্নের জবাব কোথাও মিলছেনা। মিলবেও না কখনো। অসহায় রোহিঙ্গা নারী শিশু, যুবক, বৃদ্ধরা গণহত্যার শিকার হবার পরেও যদি আখের একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারতো?
.
কিন্তু! তারা যুগযুগ ধরে নির্যাতিত হবার পরেও একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারছেনা। কারণ অভিভাবকহীন তারা। তাই তারা কোথাও একটু ঠাই পাচ্ছেনা। নিজভূমে নির্যাতনের শিকার হয়ে ভিটামাটি, আত্মীয়স্বজন ত্যাগ করে একটু সুখ আর নতুন জীবনের আশায় প্রতিবেশী সজাতির দেশে পাড়ি জমাতে এসেও ফের মুখোমুখি হচ্ছে মৃত্যুর। প্রতিবেশী দেশের নিরাপত্তারক্ষীরা হয়তো তাদের অনিশ্চিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে উত্তাল সমুদ্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, নয়তো ফের মৃত্যুকুপে ফিরিয়ে দিচ্ছে। সর্বশেষ তাদের বেঁচে থাকার কোনো পথ নেই।
.
মৃত্যু তাদের তাড়া করে ফিরছে সবখানে। মায়ানমারের আরাকান রাজ্যে জালিম মগদস্যু কর্তৃক অসহায় মুসলিম নিধন আজ নতুন করে চলছে তেমনটা নয়। যুগযুগ ধরে রোহিঙ্গারা জালিম পাপিষ্ঠদের অমানবিক, অবর্ণনীয় জুলুমের শিকার হয়ে আসছে। আরাকানে মাঝেমধ্যে একটু সজীবতা ফিরে আসলেও কদিন পর নতুন করে শুরু হয় জ্বালাও পোড়াও, হত্যা, নির্যাতন। তারই ধারাবাহিতায় বছর না যেতে আবারো পুরোদমে মগদস্যুরা মেতে উঠেছে মুসলিম হত্যায়। তবে এবার তারা আরো ভয়ঙ্কর রূপে মুসলিম নিধনে মেতেছে।
.
বাংলাদেশের সর্বশেষ প্রান্তে নাফনদীর শান্ত জলরাশির সাথে জালিমরা মিশিয়ে দিচ্ছে আমার অসহায় মুসলিম ভাই-বোনদের তরতাজা খুন। নাফনদীর এপার থেকে ওপারের সবুজ-শ্যামল পাহাড় দেখা গেলেও দেখা যায় না ওপারের রক্তাক্ত জনপথ। শোনা যায় না অসহায় মা-বোনদের গগনবিদারী আর্তনাদ। তবে শোনা যায় বোমা আর গোলাবারুদের ভয়াবহ শব্দ। যা নিমিষেই মিশিয়ে দিচ্ছে হাজারো মুসলিম ভাই-বোনদের বসতবাড়ি আর স্বপ্নে সাজানো সংসার। জালিমরা এবার মেতেছে আকাশ থেকে হেলিকপ্টারের সাহায্যে বোমা হামলায়।
.
আচ্ছা! তারা কি আজীবন এভাবে মার খেতে থাকবে? তাদের মুক্তির সম্ভাবনা নেই কি? তাদের পাশে দাঁড়াবার মতো গোটা মুসলিম বিশ্বে কোনো দরদি মুসলিম শাসক নেই কি? নাকি তারা সব হারিয়ে অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে পাড়ি জমালে যৎসামান্য ত্রাণ আর দায়সারা বিবৃতি দেওয়ার মধ্যে মোড়ল মুসলিম শাসকদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ? আরাকান সমস্যা সমাধানে মুসলিম বিশ্বের নেতারা কেনো কোনো কার্যকরী ভূমিকা রাখছেন না? যুগের সুলতান সালাউদ্দীন আর ভোগবিলাসে ডুবে থাকা আরবের মুসলিম শাসকরা কি এসব দেখছেন না?

Maolana Ali Azam

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *