মাঝেমধ্যে হলেও ইসলাহী নসিহত শ্রবণ করা দরকার। (মাওলানা আলী আযম)

আমরা নিজেদের সব জান্তা ভেবে এখন এমন হয়ে গেছি যে, কোনোপ্রকার ওয়াজ, নসিহত, ইসলাহী বয়ান, ঈমানী আলোচনা, ইলমী মুজাকারা মনোযোগ দিয়ে শুনতো দূরের কথা, বরং এসবকে পাত্তাই দিইনা। মাঝেমধ্যে আমাদের আশেপাশে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন হয়। কিন্তু আমরা এদিকে বেখবর থাকি এই ভেবে যে, আমিতো আলেম, কিম্বা আমার ধর্মীয় বিষয়ে ভালোই জ্ঞান আছে। এবং বলে থাকি এসব ওয়াজ, নসিহত সাধারণ মূর্খ জনতার জন্য। কিন্তু বাস্তবে আমার ইলমী,আলমী হালত খুবই নাজুক। অথচ সে সম্পর্কে আমি বেখবর! নিজেকে সবজান্তা ভেবেই বসে আছি।
যখন মাঝেমধ্যে ইচ্ছায় কিম্বা অনিচ্ছায় কোনো দীনি আলোচনায় শরীক হই, তখন নিজের জ্ঞানের দৈন্যতা সম্পর্কে ধারণা পাই। আমি আমার কথা বলছি, আসলে আমি যে অনেককিছুই জানিনা সেটা তখনই উপলব্ধি করতে সক্ষম হই, যখন বিজ্ঞ লোকের জ্ঞানগর্ভ দীনি আলোচনা শুনি। এমন সূক্ষ্ম অনেক বিষয় আছে যা আমরা জানা সত্ত্বেও আমাদের মনে থাকেনা। চর্চা না থাকার দরুন ভুলে যাই। অথচ বলতে গেলে একদম সহজ বিষয়। তবে ভিন্ন মজলিসে ভিন্ন বিজ্ঞজনের মুখ থেকে যখন গোছালো বিষয় ভিত্তিক দীনি আলোচনা শুনি, তখন তা সহজেই মনের মধ্যে গেঁথে যায়।
এই যেমন ধরুন আপনি ঈদের নামাজ কীভাবে পড়বেন তা আপনার জানা। অথচ এই নামাজ বছরে মাত্র দুই বার পড়ার কারণে অনেকসময় অনেক আলেমও ভুলে বসে। এভাবে বলতে গেলে বলা যায় আপনি হজ্ব কীভাবে করবেন, যাকাত কীভাবে দেবেন, কোরবানির পশু কেমন হওয়া জরুরী এসব বিষয়ে মূলত কমবেশ সবার ধারণা থাকে। কিন্তু এসব কাজ বছরে দু-য়েকবার করার কারণে বিজ্ঞজনও অনেকসময় তা ভুলে বসে। তাই এজাতীয় মৌসুমি ওয়াজ, ইসলামী নসিহত, ঈমানী মুজাকারা এবং তাবলীগি বয়ান ও মাঝেমধ্যে বিজ্ঞ আলেমের শরণাপন্ন হওয়া সবার জন্য উচিৎ মনে করি।
এতে করে নিজেদের জ্ঞান গভীরতা লাভ করে। মূর্খতা এবং অন্ধকার দূর হয়। ঈমানী হালত পরিবর্তন হয়।

Leave Your Comments

Your email address will not be published. Required fields are marked *