হাসপাতালে গিয়েছি বাচ্চা দেখতে। একজন বন্ধু নতুন বাবা হয়েছেন। যাওয়াটা কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।
ওয়েটিং রূমে বসা অবস্থায়ই একজন দ্রুত এসে বলল, ডাক্তার সাব আপনারে ডাকে।
আমারে ডাকে! কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হলাম। ওটিতে প্রেগন্যান্ট মা বোনদেরকেই তো ডাকা হয়!
ডাক্তার সাব হেসে বললেন, আসেন হুজুর, ভয়ের কিছু নেই। একটা বাচ্চা হয়েছে আজান দিতে হবে।
আজান ও একামত দিলাম।
নবজাতক এই শিশুর কান্না মোটামুটি মাশাআল্লাহ দারুণ। পুরো হাসপাতালশুদ্ধ সবাইকে জানান দিয়েই সে কাদছে।
ডাক্তার বললেন, ওর পেটে প্রচুর ক্ষিধে। তাই কেদে কেটে জানান দিচ্ছে পৃথিবী বাসীকে এই ক্ষিধের খবর।
আমার ব্রেনের ভেতর চট করে নতুন এক উপলব্ধি হল, নবজাতকের এই গলা ফাটিয়ে কান্না করার পদ্ধতিটা হচ্ছে একটা মিডিয়া। এই মিডিয়ার মাধ্যমে সে জানাচ্ছে, মা দুধ দাও, আমার অনেক ক্ষিধে পেয়েছে।
আল্লাহ সৃষ্টির শুরুতেই মিডিয়া মারফত জানানোর পদ্ধতি মানুষকে শিখিয়ে দিয়েছেন প্রাকৃতিকভাবে। তার নেজাম তিনি এভাবেই সাজিয়েছেন।
আমরা কেন মিডিয়াকে গুরুত্ব দেইনা, প্রয়োজন বুঝিনা বুঝলেও তা বাস্তবায়নে নেমে পড়িনা জানিনা।
একাত্তর টিভি আর সময় টিভিকে অভিসম্পাত করে লাভ নাই। আপনার মিডিয়া কর্মী আপনার কথা বলবে। আরেকজনের তৈরি করা মাল আপনার কথা বলবে কেন?
আপনার কষ্টের কথা আপনাকেই বলতে হবে। আপনার চিৎকার আপনাকেই দিতে হবে। আপনার কান্না আপনাকেই কাদতে হবে। আপনার হয়ে আরেকজন কেদে দিবেনা। আপনার আনন্দে আরেকজন হাসবেনা। সেই হাসিটুকুও আপনাকে হাসতে হবে।
আসেন নিজের হাসি, নিজের কান্না নিজেরাই করি।
নাস্তিক মিডিয়াকে দোষারোপ না করে নিজেরাই তৈরি করি শত শত মিডিয়া, হাজার হাজার সাংবাদিক।
নবজাতকের কান্না থেকেও তো শিক্ষা নেয়া যায়। যায়না?
Leave Your Comments