উত্তর:
প্রশ্নোক্ত বর্ণনাটি ঠিক নয়। এটি একটি মুনকার বর্ণনা। এটি ইমাম তবারানী রাহ.-এর আলমুজামুল কাবীর গ্রন্থে (বর্ণনা নং ২৮৮৮) এবং ইমাম বায়হাকী রহা.-এর শুআবুল ঈমান গ্রন্থে (বর্ণনা নং ৩৯৬৬-৬৭) উলেখ আছে।
কিন্তু হাদীস বিশারদগণের নিকট বর্ণনাটি সনদের বিচারে মানোত্তীর্ণ নয়। এর সনদে মুহাম্মাদ ইবনে যাযান ও আনবাসা ইবনে আবদুর রহমান নামে দু’জন ব্যক্তি রয়েছে, যাদের সম্পর্কে জরহ-তাদীল শাস্ত্রের ইমামগণের বিভিন্ন আপত্তি আছে।
আলামা মুনাবী রাহ. উক্ত হাদীস সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে ফয়যুল কাদীর গ্রন্থে বলেছেন, উক্ত বর্ণনায় মুহাম্মাদ ইবনে যাযান নামে একজন রাবী আছেন, যিনি মাতরুক (পরিত্যাজ্য)। এছাড়া এতে আনবাসা ইবনে আবদুর রহমান রয়েছে, যাকে ইমাম বুখারী রাহ. মাতরুক বলেছেন। আর ইমাম যাহাবী রাহ. তাকে জাল বর্ণনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।
সুতরাং ইতিকাফের ফযীলত সম্পর্কিত প্রশ্নোক্ত বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এটি মানুষের মাঝে বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে রমযানের শেষ দশকের ইতিকাফ অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ সুন্নত আমল। রাসূলুলাহ সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা তা প্রমাণিত। এক রমযানে কোনো কারণে তিনি ইতিকাফ করতে পারেননি। তাই পরবর্তী বছর তিনি বিশদিন ইতিকাফ করেছেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৪৬৮
তাই প্রশ্নোক্ত ফযীলতের বর্ণনাটি বিশুদ্ধ না হলেও ইতিকাফ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফযীলতপূর্ণ ইবাদত তা রাসূলুলাহ সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম-এর বাস্তব আমল দ্বারা সহজেই অনুমেয়।
Leave Your Comments